ভারত-পাকিস্তান সংঘ-র্ষের পর থেকেই ক্ষ’তিগ্রস্ত হয়েছে টিকটক সহ অন্যান্য অনেকগু’লি অ্যাপ। টিকটক ব্যান্ড হয়ে যাবার পর থেকেই প্রায় সারা ভারতবর্ষের জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় টিকটকার দের নিয়ে সমালোচনা এবং উপহাস করা চলেছে সমান তালে।এই টিকটক এর বিকল্প হিসাবে নতুন একটি অ্যাপ তৈরি করে নজর কাড়লেন পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের একটি যুবক। নতুন এই অ্যাপটির নাম “টুকটাক”। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রত্যেক ভারতবাসীকে স্বনির্ভর হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
যতটা সম্ভব প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে সাহায্য না নিয়ে নিজেরাই সমস্ত কিছু তৈরি করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে, এমনই আবেদন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।পুরুলিয়ার এই প্রত্যন্ত গ্রামের এই যুবকটি বোধহয় সেই ডাকে সাড়া দিয়েছে। পুরুলিয়া ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম পুস্টির যুবক প্রসেনজিৎ কুইরি তার বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে টিকটক এর বিকল্প টুকটাক অ্যাপ নিয়ে আসে।
গত ৫ ই জুলাই এই গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করে প্রসেনজিৎ। আপলোড হয়ে যাবার পরেই প্রায় চার হাজার জনের বেশি এই অ্যাপ ডাউনলোড করে কাজ করছেন।বছর বাইশের এই যুবকটির ছোটবেলা থেকেই প্রযুক্তির প্রতি ঝোঁক বেশ অনেকটাই। লেখা পড়ার সাথে সাথেই প্রযুক্তির দিকেও তার ঝোঁক ছিল সমান। এই কারণে মাঝে মাঝে কিছু না কিছু কারিগরি করে যেত সে। গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পাস করে সে, এরপর ঝালদার বেগুনকদর বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক।
মাধ্যমিক পাশ করে ঝালদার এক ব্লকে সত্যভামা বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে সে।এর পরেই তার প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সংস্থা খুলে বসেন তিনি।তার তৈরি করা অ্যাপ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,”টিকটক আমাদের ভারতবর্ষে ছিল খুবই জনপ্রিয় একটি অ্যাপ। তাই টিক টক ব্যান হয়ে যাবার পর থেকেই দেশবাসীর মধ্যে একটি ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী তাতে সাড়া দিয়ে এমন একটি অ্যাপ আমি তৈরি করেছি, যা পুরোটাই টিক টক এর মতই। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভারতীয় একটি অ্যাপ। যা ভারতে তৈরি এবং ভারতবাসীর জন্য তৈরি”।
এখনো পর্যন্ত সেই অ্যাপটি বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগায়নি সে। বর্তমানে সুদূর মুম্বাইয়ে ডাটা সেন্টারে গিয়ে তিনি এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে গ্রামে সার্ভার বসিয়ে এই কাজ করার ইচ্ছে তার।ছেলের এই কর্মকান্ডের জন্য রীতিমতো গর্বিত তার বাবা। তার বাবা নীলকন্ঠ প্রসাদ কুইরি পেশায় একজন পোস্টমাস্টার। তিনি জানিয়েছেন,”ছেলের আমার বরাবরই প্রযুক্তির দিকে ঝোঁক রয়েছে। কিন্তু টিকটক ব্যান হয়ে যাওয়ার পর তার সমতুল্য কোন অ্যাপ যে ছেলে আনতে পারবে তা আমার কল্পনার অতীত ছিল”। প্রসেনজিতের এই অভা’বনীয় কাজে খুশি তার গ্রামবাসীরাও। আপাতত সকলেই মজে রয়েছেন এই নতুন অ্যাপ টিতে।